সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
নলছিটি প্রতিনিধি॥ ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর ঠাঁই হচ্ছে না স্বামীর বাড়ি। মারধর করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বাবার বাড়ি। শনিবার রাতে ঝালকাঠির নলছিটিতে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, শনিবার রাতে নলছিটির কাঠিপাড়া গ্রামে ওই গৃহবধূর বাড়ির পেছনের গাছ বেয়ে ছাদ থেকে ঘরের ভেতরে ঢুকেন হিরণ। পরে ওই গৃহবধূর কক্ষে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। এসময় তার চিৎকার শুনে পরিবার ও আশপাশের লোকজন এসে ধর্ষণকারী যুবককে আটক করেন। তার হাত-পা বেঁধে মারধর করে স্থানীয়রা। এসময় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে নানা অপবাদ নিয়ে মারধর করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এমনকি ধর্ষণকারী ও গৃহবধূকে পাশাপাশি বসিয়ে অশ্লীল ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা। পরে গৃহবধূকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
ওই গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ‘তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। শাশুড়িও ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। ধর্ষণের ঘটনা শুনে তারা আমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি নির্যাতিত হলাম আবার তাদের মারও খেলাম, এখন আমাকে বাড়িতেও রাখবে না। আমি কোথায় যাবো?’ আমার স্বামী বলেছে, ‘তুই ধর্ষণের শিকার হইছিস, তোকে আর রাখা যাবে না; তালাক দিয়ে দিবো।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানান, ওই গৃহবধূর দুটি সন্তান রয়েছে। রাতে ধর্ষণকারীকে আটক করার পরে গৃহবধূকেও মারধর করা হয়। তাদের দু’জনকে এক সাথে বসিয়ে গলায় হাত দিয়ে ভিডিও ও ছবি তোলা হয়। এগুলো যারা ফেসবুকে ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
গৃহবধূকে নির্যাতনকারী প্রতিবেশী মো. বাবুল বলেন, অপরাধ করেছে দু’জনেই তাই মারধর করা হয়েছে। মারধর করবো না-তো ছেড়ে দেব?
ঢাকায় চাকরিরত গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছি। আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত আমার স্ত্রীকে রাখা সম্ভব নয়। পরে কি করা হবে, তা এখন বলা যাচ্ছে না।’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম তালুকদার জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছে ওই গৃহবধূ। আসামি গ্রেফতার হয়েছে। ওই গৃহবধূকে মারধর, ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া ও তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ার কথা শুনেছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply